হিট স্ট্রোক কি? এর কারন, লক্ষন ও প্রতিকার
এই গরমের সময় মানুষের অনেক বড় একটা সমস্য হিট স্ট্রোক।প্রতিদিনের কর্মক্ষেত্রের জন্য আমাদেরকে সবসময় বাইরে বের হতেই হয়।আর এই প্রখর রোদের জন্য শরীরের পানি শুকিয়ে পানি শূন্য হয়ে যায় ফলে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
কিভাবে বুঝবেন আপনি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন কিনা। কি কি লক্ষন দেখে বুঝবেন হিট স্ট্রোক হতে যাচ্ছে।হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কি কি করবেন তা এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
হিট স্ট্রোক কি
গরমের সবচেয়ে মারাত্মক অসুস্থতা হচ্ছে হিট স্ট্রোক।শরীর যখন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা তখন মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।এর কারনে শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়।হঠাৎ করেই শরীর অতিরিক্ত ঘেমে যায় আবার হঠাৎ করেই শরীরে ঘাম হওয়া বন্ধ হয়ে যায়।এবং শরীর নিজে থেকে ঠান্ডা হতে পারেনা।কোনো ব্যক্তি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে দেহের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌছে যায়।হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তি যদি সময়মতো চিকিৎসা না পান তাহলে তার মৃত্যুও হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির উপায়
হিট স্ট্রোকের কারন
হিট স্ট্রোক কয়েকটি কারনে হতে পারে।যেমনঃ-
- শরীরে পানি শূন্যতা বা মিনারেলস এর অভাবে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
- পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা জনিত কারনে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
- রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্ট্রলের কারনে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
- হঠাৎ করে ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে গরম আবহাওয়ার মধ্যে গেলে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
- কিছু কিছু মেডিসিন সেবনে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং পানি শুন্যতা দেখা দেয়
- যারা হৃদরোগে আক্রান্ত,ফুসফুসের জটিলতা আছে এবং শরীরের ওজন অনেক তাদের হিট স্ট্রোক হওয়ার ঝুকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।
হিট স্ট্রোকের লক্ষন সমূহ
মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবারাহের ঘাটতি দেখা দিলে সেই অংশের কোষ কার্যক্ষমতা হারায়।আর এই অবস্থাটাকেই হিট স্ট্রোক বলে।হিট স্ট্রোকের লক্ষন গুলো হলো-
- তীব্র মাথাব্যথা।
- প্রচন্ড তৃষ্ণা অনুভব করা,পানি শূন্যতা।
- দ্রুত হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া।
- হাইপারভেন্টিলেশন।
- বমি বমি ভাব।
- হঠাৎ শরীর প্রচন্ড ঘামতে শুরু করা আবার হঠাৎ করেই কোনো ঘাম না হওয়া।
- প্রস্রাবের পরিমান কমে যাওয়া।
- হাত পা কাপা, শরীরে খিচুনি হওয়া।
- বিরক্তি, বিভ্রান্তি বা প্রলাপ বকা।
- কথা জড়িয়ে আসা।
- পেশিতে ব্যাথা হওয়া।
- দূর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।
হিট স্ট্রোকে কারা বেশি আক্রান্ত হয়
যেকোনো বয়সের মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে।তবে শিশু ও বৃদ্ধদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি অনেক বেশি।তাছাডাও যাদের শরীর অতিরিক্ত দূর্বল তারাও হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন।
হিট স্ট্রোকের চিকিৎসা বা প্রতিকার
- হিট স্ট্রোকের লক্ষন গুলো দেখা দিলে প্রথমেই শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য ঠান্ডা বরফ পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে।
- হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যাক্তিকে খুব দ্রুত ঠান্ডা জায়গায় নিতে হবে।
- শরীরের কাপড় যতোটা সম্ভব খুলে দিতে হবে।
- আক্রান্ত ব্যাক্তিকে পর্যাপ্ত পরিমান বাতাস দিয়ে শরীর ঠান্ডা করতে হবে।
- হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যাক্তি জ্ঞ্যান হারিয়ে ফেললে যতো দ্রুত সম্ভব স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
সতর্কতা
রোদে অধিক সময় ধরে কাজ করা যাবেনা। প্রয়োজনে কাজের ফাকে ফাকে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হবে।
এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান করতে হবে। চাইলে স্যালাইনও খাওয়া যাবে।তাছাড়া ডাবের পানি,আখের রস,তরমুজ বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
আগুনের কাছে কাজ করার সময় বা রান্না বান্না করার সময় বিরতি নিয়ে ফ্যানের কাছে বসা ভালো।
এই গরমের সময় হালকা সুতির পোশাক পরিধান করা উত্তম।
শিশুদেরকে রোদে বাইরে খেলাধুলা করতে দেওয়া যাবেনা।
লেখকের মন্তব্য
হিট স্ট্রোকে অনেক সময় বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।সেই জন্য গরমের এই সময়টাতে সকলেরই সাবধানে থাকা উচিৎ।
এই পোস্টটি যদি আপনার পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্বীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন যেনো এই পোস্টটি পরে উনারাও উপকৃত হতে পারে।
আর এস জান্নাত এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url