চিয়া সিড কি? এর উপকারিতা ,অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম


বর্তমানে মানুষ খাবার নিয়ে অনেক সচেতন। প্রতিদিনের খাবারে কি পরিমান পুষ্টিগুণ আছে বা কি কি খেলে সব রকমের ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ শরীরে পাওয়া যাবে তা নিয়ে সচেতন থাকেন অনেকেই। আর তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় নিত্য নতুন খাবারে মনোযোগ সবার।


খাবার তালিকার মধ্যে সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত চিয়াসিড। যারা একটু বেশি স্বাস্থ্য সচেতন তাদের খাবারের তালিকায় এখন চিয়াসিড বেশ জনপ্রিয়।

চিয়া সিড কি?

চিয়া সিড মূলত মরুভূমিতে জন্মানো সালভিয়া উদ্ভিদের বীজ। এটি মধ্যো আমেরিকার অনেক অংশে পাওয়া যায়। এটি সাধারনত শস্যোর তালিকায় পড়লেও একে একধরনের ভেষজও বলা হয়। বিশেষজ্ঞরা দাবি করেন এটি প্রাচিন আ্যজটেক জাতির প্রধান খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত। পুস্টিকর খাবার গুলোর মধ্যো চিয়াসিড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ

পুষ্টিকর খাবার গুলোর মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে অন্যতম খাবার হলো চিয়া সিড। প্রাচীন কাল থেকেই চিয়া সিডকে সোনার চেয়েও মূল্যবান মনে করা হতো।সিড বা বীজ জাতীয় সকল ধরনের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। চিয়া সিড এ আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,আয়রন , ক্যালসিয়াম , ওমেগা -৩ ফ্যাটি এসিড কোয়েরসেটিন,ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাভেট এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং দ্রবণীয় ও দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ।

আরও পড়ুনঃওজন কমাতে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

চিয়া সিড এর উপকারিতা

  • চিয়া সিড এ রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টি-অক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে মুরগির ডিম থেকে ৩ গুন বেশি উচ্চমাত্রার প্রোটিন আছে চিয়া সিডে যা মানব দেহের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় ও উপকারী।
  • চিয়া সিড ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখে যা ডায়বেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
  • গবেষকদের দাবি,চিয়া সিডে স্যালমন মাছের চেয়ে ৮ গুন বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি আ্যসিড আছে যা হৃদরোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
  • দুধের চেয়ে ৫ গুন বেশি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় চিয়া সিড থেকে।যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং মজবুত করে তুলতে বিশেষ উপকারী।
  • এছাড়া চিয়া সিড শরীর থেকে বর্জ পদার্থ বের হতে সাহায্য করে এবং গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে এবং ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে।
  • এটি শরীরের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • চিয়াসিড কোলন পরিস্কার রাখে।ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
  • এই বীজ ক্যন্সার রোধ করে।
  • চিয়াসিড হজমে সহায়তা করে।
  • এটি ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে।

চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম

চিয়াসিড খাওয়ার নিয়ম বিষয়ে পুস্টিবিদ সৈয়দ শিরিনা স্মৃতি জানান দ্রুত ওজন কমাতে খালি পেটে সকালে ও রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির মধ্যে ২ চা চামচ চিয়াসিড ও ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে চিয়াসিড স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে ।

চিয়া সিড এর অপকারিতা

যে কোন খাবারের উপকারিতার পাশাপাশি অপকরিতাও থাকে।সেইরকম ভাবে চিয়া সিডেরও কিছু অপকারিতা রয়েছে।
  • কয়েকজন বিজ্ঞানী চিয়া সিড নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন যে চিয়া সিট প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই চিয়া সেট সীমিত পরিমাণ খাওয়া উচিৎ।
  • মাত্রা অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। কারণ এর মধ্য প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে। সেজন্য চিয়া সিড পরিমাণে অল্প খাওয়া উচিত। আর এটি খেলে যদি স্বাস্থ্য সমস্যা মনে হয় তাহলে সাথে সাথে এটি খাওয়া বন্ধ করা উচিত।
  • চিয়া সিড শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড খেলে রক্তচাপ বেশি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লেখকের মন্তব্য

চিয়াসিড আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি ।তাই আমাদের সকলের উচিৎ প্রতিদিন খালিপেটে একগ্লাস করে চিয়াসিড খাওয়া।

এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধু ও আত্বীয়দের সাথে পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।এতে পোস্টটি পরে সবাই উপকৃত হতে পারবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর এস জান্নাত এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url