জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত

জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব অনেক ।বিশেষ করে এই মাসের প্রথম ১০ দিনের গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক বেশি।চারটি সম্মানিত মাসের মধ্যে জিলহজ্জ মাস একটি। এই মাসের আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে অধিক প্রিয়। জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নাত জেনে নিন।
জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত
প্রিয় পাঠক,আপনি যদি জিলহজ্জ মাস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে 
পড়ুন।এই পোস্টের মাধ্যামে আপনি জানতে পারবেন জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে।এবং জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নাত সেই সম্পর্কে।

জিলহজ্জ নামের অর্থ কি

জিলহজ্জ শব্দটি আরবি শব্দ।এটি ধু আল-হিজ্জাহ ইসলামি বর্ষপঞ্জির ১২ তম মাস।জিলহজ্জ মাস মুসলিমদের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ মাস।এইমাসে মুসলিমগন হজ্ব পালন করেন।জিলহজ্জ মাসের ৭ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত হজ্ব পালনের জন্য নির্ধারিত তারিখ।

জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নাত

জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নত এই সম্পর্কে বলা হয়েছে,জিলহজ মাসের শুরু থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রাসূল (সা.) সিয়াম পালন করতেন।জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ আরাফার দিবস।আর যারা হজে যাবেনা তাদের এই আরাফার দিবসে সিয়াম পালন করা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।কেউ যদি মনে করে জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত সিয়াম পালন করবেন তাহলে তিনি করতে পারেন।

নবী করিম (সা.) বলেছেন জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল আল্লাহর কাছে অনেক বেশি প্রিয়।এমনকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের চেয়েও বেশি প্রিয় আমল।জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন রোজা করা সুন্নত।তবে ঈদের দিন সিয়াম পালন করা যাবেনা।

জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত

জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। সাধারনত জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত অনেক ।সেইজন্য এই ১০ দিন ব্যাপকহারে আমল করা উচিত এবং রোজা পালন করা উচিত।বিশেষ করে ৯ জিলহজ্জে রোজা রাখার ব্যাপারে প্রিয়নবী সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন।এ দিনের রোজা পালনকারীদের বিগত ১ বছরের গুনাহ এবং সামনের ১ বছরের গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

তবে যারা হজ্জ আদায়ে সেদিন আরাফায় থাকবেন তাদের জন্য এই বিধান নয়।কেননা প্রিয়নবী আরাফায় থেকে রোজা রাখেননি।তাই আরাফায় যারা থাকবে তাদের এই রোজা রাখা জরুরি নয়।জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আরও আলোচনা করা হলো।

জিলহজ্জ মাসের আমল সমূহ

জিলহজ্জ মাসের আমল সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস পাওয়া যায়।মহানবি (সা.)বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি কুরবানি করতে চায়,সে যেনো জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পর নখ ও চুল না কাটে (ইবনে মাজাহ)।সেজন্য জিলহজ্জ মাস শুরুর আগেই সকল মুসলিমদের উচিত চুল ও নখ কেটে পরিস্কার পরচ্ছন্ন হওয়া।জিলহজ্জ মাসের এই দিনগুলোতে প্রচুর পরিমানে তাকবির পাঠ করা উচিত।

হজরত ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্নিত আছে যে ,তিনি বলেন ,মহানবি (সা.) বলেন,অতএব তোমরা এই দিনগুলোতে বেশি বেশি করে তাহলিল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ,তাকবির(আল্লাহু আকবার), এবং তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ)পড়বে।বোখারির হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, নেক আমলের জন্য জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন সর্বত্তম সময়।জিলহজ্জ মাসের আমল গুলোর মধ্যে সর্বোত্তম আমল গুলো হলো-
  • জিলহজ্জ মাস পড়ার শুরু থেকেই নখ,চুল ও দাড়ি না কাটা।প্রিয়নবী বলেছেন ,যার কুরবানির পশু রয়েছে বা যার পক্ষ থেকে কুরবানি করা হবে সে যেন জিলহজ মাসের নতুন চাঁদ ওঠার পর থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত চুল নখ ও দাড়ি না কাটে। যারা কুরবানী দিবেন না তারাও এই আমলটি করলে কোরবানির সওয়াব পাবেন।
  • জিলহজ মাসের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত নফল রোজা রাখতে হবে। ওমের সালমা রা.থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(সা.)চারটি কাজ কখনোই ছাড়তেন না। ১,আশুরার রোজা। ২, জিলহজ মাসের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রোজা।৩, প্রতি আরবি মাসের ১৩ থেকে ১৫ তারিখের রোজা।৪, ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজ।
  • জিলহজ মাসের এক থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত বেশি বেশি তাকবির পাঠ করা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন এই ১০ দিনের আমলের চেয়ে বেশি প্রিয় আমল আল্লাহর কাছে আর নেই। তাই এই দিনগুলোতে তোমরা তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) তাকবির (আল্লাহু আকবার) তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) পড়া বাড়িয়ে দাও।
  • জিলহজ মাসে কুরবানী করা। রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, যে ব্যক্তি পশু কেনার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহ না আসে।
  • জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিন নফল ইবাদত বেশি বেশি করা।যেমন কোরআন তেলাওয়াত,করা ইস্তেগফার করা, দোয়া ও মোনাজাত করা।

জিলহজ্জ মাসের ফজিলত সমূহ

  • জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের ফজিলত সম্পর্কে প্রিয়নবী বলেন,এমন কোনো দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের রোজা একবছরের রোজার সমান।জিলহজ্জ মাসের ফজিলত গুলো আলোচনা করা হলো-
  • জিলহজ্জ মাস হল হজের মাস। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস(রাঃ) বলেন, হজের সুবিদিত মাসগুলি হল চাওয়ার জিলকদ ও জিলহজ। আল্লাহ এই মাস গুলি হজের জন্য নির্ধারণ করেছেন। আর ওমরা সারা বছর আদায় করা যায়। এই মাস গুলি ব্যতীত হজের জন্য ইরাম বাধলে হজ হবে না।
  • চারটি সম্মানিত মাসের মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাস। মহান আল্লাহ বলেন,নিশ্চয়ই মাস সমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন এর মধ্য থেকে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন।
  • এটা কোরবানির মাস। কোরবানির জন্য একমাত্র মাস হল জিলহজ মাস।রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন,”যে ব্যক্তি সালাতের পূর্বে যবহ করেছে সে যেন তদস্তলে আরেকটি যবহ করে নেয়।আর যে ব্যক্তি আমাদের সালাত আদায় করা পর্যন্ত যবহ করেনি সে যেন এখন আল্লাহর নাম নিয়ে যবহ করে”। ১০ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মোট চারদিন কুরবানী করার সময়।

জিলহজ্জ মাসের ক্যালেন্ডার ২০২৪

লেখকের মন্তব্য

চারটি সম্মানিত মাসের মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাস। মহান আল্লাহ বলেন,নিশ্চয়ই মাস সমূহের গণনা আল্লাহর কাছে বার মাস আল্লাহর কিতাবে (সেদিন থেকে) যেদিন তিনি আসমান জমিন সৃষ্টি করেছেন এর মধ্য থেকে চারটি মাস হচ্ছে সম্মানিত। এটাই প্রতিষ্ঠিত দ্বীন।জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা করা সুন্নাত সেগুলোর জানার পাশাপাশি জিলহজ্জ মাসের আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আমাদের সকলের জেনে রাখা উচিত।

প্রিয় পাঠক,এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্বীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন,যেনো এই পোস্টটি পড়ে উনারাও উপকৃত হতে পারেন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর এস জান্নাত এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url