গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায়
গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায় তা এই পোস্টের মাধোমে জানতে পারবেন। বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল পাওয়া যায়। এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি,সুগন্ধি ও রসালো ফল উঠতে শুরু করে। বিভিন্ন ফলে রয়েছে বিভিন্ন রকমের পুষ্টিগুণ। গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা অনেক বেশি।এসব ফলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য শক্তি থাকে যা শরীরের ভেতর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বের করতে সাহায্য করে।
প্রিয় পাঠক আপনি যদি গ্রীষ্মকালীন ফল সম্পর্কে ধারণা নিতে চান এবং গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায় তা জানতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এ পোষ্টের মধ্যে গ্রীষ্মকালীন বিভিন্ন ফলের নাম এবং এসব ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
ভূমিকা
গ্রীষ্মকাল মানেই হল ফলের ঋতু।গ্রীস্মের অসহ্য গরমের মধ্যেও স্বস্তি দিতে বাজারে হাজির হয়েছে অসংখ্য রকমের রসালো সব ফলমূল। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, পেঁপে,বেল ইত্যাদি সকল ধরনের ফল খাওয়ার সময় গ্রীষ্মকাল । এ সকল ফল শুধুমাত্র সুস্বাদু নয় ,এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল।কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কোন ফলে কি গুন রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায় এবং এসব ফলে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে।
গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায়
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। তবে বছরের সবচেয়ে উষ্ণতম কাল হলো গ্রীষ্মকাল। গ্রীষ্মকাল বলতে বৈশাখ ও জৈষ্ঠ মাস কে বোঝানো হয়। এই গ্রীষ্মকালে বিভিন্ন রকমের রসালো ফলমূল পাওয়া যায়। অনেকে আবার গ্রীষ্মকালকে মধু মাস বলে থাকেন। এই গ্রীষ্মকালকে ফলের ঋতুও বলা হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই ঋতুতে কি কি ফল পাওয়া যায়।গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা অনেক। তবে আসুন জেনে নেয়া যাক গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালীন ফলের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
- আম
- জাম
- কাঁঠাল
- লিচু
- তরমুজ
- বেল
- পেঁপে
- পেয়ারা
- সফেদা
- জামরুল
- আমড়া
- লটকন
- আনারস
- কালোজাম
- তালের শাঁস ইত্যাদি।
গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের জন্য অসংখ্য নেয়ামতের ব্যবস্থা করেছেন। তার মধ্যে ফল-মূল হলো অন্যতম নেয়ামত। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় সারা বছর কোন না কোন ফল থাকেই তবে জোষ্ঠ্য আষাঢ় মাসে আসে বিভিন্ন রকমের রসালো ও সুস্বাদু ফল। গ্রীষ্মকালের অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এসব ফল মানুষকে স্বস্তি দেয়। এগুলোর মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণও রয়েছে। এগুলোর মধ্য রয়েছে পানি খাদ্য-আশ ও প্রাকৃতিক চিনির উৎস। বিভিন্ন রকমের ফলের মধ্যেও রয়েছে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায় তা আমরা জানলাম। তবে এবার জেনে নেয়া যাক গ্রীষ্মকালীন ফলমূলে কি কি পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা রয়েছে।
আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
গ্রীষ্মকালীন ফলের তালিকায় আম একটি অন্যতম ফল। সুমিষ্ট ফল আমের আছে অসংখ্য উপকারিতা। এটি নানাভাবে খাওয়া যায়।এটি কাঁচা বা পাকা দুই অবস্থাতেই অনেক সুস্বাদু একটি ফল। আম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও ভুলে যাওয়ার সমস্যা এবং আথ্রাইটিসের মতো রোগ দূরে রাখে। প্রচুর পরিমাণ আজ থাকায় এটি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা দূর করে।
আমে আছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম এবং এটি শরীরে মিনারেলসের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে। পাকা আমের প্রোটিনের মাত্রা অনেক বেশি। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ খনিজ লবণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন। আম হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আমে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ত্বকের সুস্থতার জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়াও আমে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা চুলের ফলিকলকে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে এবং চুল পড়ার হার অনেক অংশে কমিয়ে দেয় । তবে আম উপকারী ফল হলেও এটি একসাথে অনেক বেশি খাওয়া উচিত নয়। কেননা পাকা আমের প্রচুর পরিমাণ চিনি থাকে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য পাকা আম খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আম খাওয়ার আগে পরামর্শ নিতে পারেন।
কাঁঠালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায়?বাংলাদেশের গ্রীষ্মকালীন ফলের মতো কাঁঠাল একটি অন্যতম ফল। কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। কাঁঠাল রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার,খনিজ,ভিটামিন,ক্যালরি,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাঁঠাল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে ও হার্টকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সুমিষ্ট এ ফলটি পুষ্টিগুণে ভরা। এক কাপ পরিমাণ কাঁঠাল রয়েছে ১৫৭ ক্যালরি, 38 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, তিন গ্রাম ফাইবার, ৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, এবং ২ গ্রাম ফ্যাট।
এছাড়াও কাঁঠালের রয়েছে ভিটামিন সি,ভিটামিন এ ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,পটাশিয়াম,কপার,ম্যাগনেসিয়াম, ও ম্যাঙ্গানিজ। কাঁঠালের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন থাকায় দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। এছাড়াও কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। কাঁঠালে কয়েক ধরনের এন্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।
এছাড়াও কাঁঠালে পটাশিয়াম থাকার জন্য উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠালের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার জন্য নিয়মিত এই ফলটি খেলে ত্বক ভালো থাকে এবং ত্বককে রোদের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে রাখা যায়। তাই মৌসুমীর ফল হিসাবে কাঁঠাল অনেক উপকারী একটি ফল।
লিচুর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
গ্রীষ্মকালীন এ ফল স্বাদে ভরপুর এবং পুষ্টিগুনো সমৃদ্ধ। লিচুতে ভিটামিন সি থাকার কারণে রক্তের শ্বেত কণিকার কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে যার জন্য শরীরে বাইরের কোন ক্ষতিকারক জীবাণু প্রবেশ করতে পারে না। লিচু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মিনারের ও ভিটামিন। লিচুতে তেমনভাবে ফ্যাট না থাকার জন্য এটি খুবই উপকারী একটি ফল।
লিচুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। তাছাড়াও এতে রয়েছে আইরন,ক্যালসিয়াম,ফলিক অ্যাসিড,ম্যাগনেসিয়াম। এ সকল খনিজ উপাদানের জন্য দৈনন্দিন পুষ্টিচাহিদা মেটাতে লিচু অনেক উপকারী একটি ফল। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ লিচু খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে এবং সুগার লেভেল বেড়ে যেতে পারে পাশাপাশি পেট খারাপ হতে পারে। তাই নিয়ম মেনে পরিমান মত যে কোন মৌসুমী ফল খাওয়া উচিৎ।
তরমুজের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
তরমুজ একটি গ্রীষ্মকালীন ফল।তরমুজের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অনেক।তরমুজ সকলের কাছে একটি প্রিয় ফল। তরমুজে রয়েছে ভিটামিন এ,সি,বি ও বি-২ যা শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও তরমুজে শতকরা প্রায় ৯২ ভাগ পানি রয়েছে। যেটা আমাদের দেহের পানির চাহিদা মিটিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে রয়েছে আমিষ ০.৫ গ্রাম, ক্যালোরি ১৫ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম, আইরন৭.৯ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম,কার্বোহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম। তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও তরমুজ শারীরিক শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তরমুজে থাকা ভিটামিন সি ত্বককে সজীব রাখে।তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যারোটিনয়েড। যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।
তরমুজে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকার কারণে কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তরমুজে থাকা অ্যামাইনো এসিড শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়াও তরমুজে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের জমে থাকা কোলেস্ট্রল কমিয়ে দেয়। এছাড়াও তরমুজে রয়েছে লাইকোপিনো নামক লাল উপাদান যা হাড় গঠন ও মজবুত করতে সাহায্য করে।
বেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
গ্রীষ্মকালীন এই গরমে আমরা বিভিন্ন রকমের ফলের রস পান করে থাকি।গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায়? এর মধ্যে বেল অন্যতম। বেল দিয়ে তৈরি শরবত খুবই সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিয়মিত বেল খেলে আপনার সুস্থ থাকার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। বেল হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে বেল খুবই উপকারী। পাকা বেলের শ্বাসে থাকে অনেক পরিমানে ফাইবার যা আলসার রোধে বিশেষভাবে কার্যকরী।
পাকা বেলে মেথানল থাকে যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এজন্য এটি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী।এমনকি এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বেলের ডালে এমন উপাদান আছে যা আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় অনেক উপকারী। তাই যারা আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত বেল খেতে পারেন।
পেঁপের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
গরমে পেট ঠান্ডা রাখতে পাকা পেঁপে অনেক উপকারী একটি ফল। বিভিন্ন ফলের মধ্যেও পেঁপে পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। পেঁপেতে রয়েছে রোগ নিরাময়ের ক্ষমতা। পেপে কাঁচা ও পাকা দুই ভাবে খাওয়া যায়। পেপে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।পেপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, সি, ই যা শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও পেঁপে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। এতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম আছে যে কারণে খাবার হজমে সাহায্য করে। প্রাকৃতিকভাবে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য পেঁপে খুবই কার্যকর একটি ফল। এছাড়াও পেঁপে কোলেস্টেরল কমায়। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা কেরোটিন আছে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। পেঁপেতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি আদর্শ ফল।
পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম এবং কপার রয়েছে।নিয়মিত পেঁপে খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম তৈরি হয় যা হার মজবুত করে। এছাড়াও পেঁপে ক্যান্সার নিরাময়ে ভূমিকা রাখে পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্ড অক্সিডেন্ট থাকার কারণে দেহে ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে বাধা দেয়।
পেয়ারার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
পেয়ারা একটি দেশীয় ফল যা সারা বছর পাওয়া যায়।এটি দামে সস্তা ও সহজলভ্য।এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি।অন্যান্য যে কোন ফলের তুলনায় পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক অংশে বেশি।পুষ্টিগুণে ভরপুর এই পেয়ারায় রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ।বিশেষ করে এতে রয়েছে ভিটামিন সি।একটি পেয়ারায় আছে চারটি আপেল ও চারটি কমলা লেবুর সমান পুষ্টিগুন।
তাছাড়াও পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার,পটাশিয়াম,পানি,ভিটামিন এ,বি,কে,প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও খনিজ পদার্থ।পেয়ারা দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে।তাছাড়াও ডায়াবেটিস রোগের জন্য খুব কাজ করে পেয়ারা পেয়ারার রসে যে উপাদান থাকে সেটি ডায়াবেটিস মেলিটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। পেয়ারা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
সফেদার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
সফেদায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে গ্লকোজ যা দেহে শক্তি যোগায়। এছাড়াও সফেদায় রয়েছে ক্যালসিয়াম ও লৌহ যা আমাদের হাড় ও দাঁত সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।সফেদাই রয়েছে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান,ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ও ভিটামিন ই এবং ক্যালসিয়াম কপার আয়রন ফসফরাস সহ অপরিহার্য অনেক পুষ্টি উপাদান।তাছাড়াও সফেদা মানসিক চাপ কমাতে ও বিষণ্ণতা দূর করতে সাহায্য করে।
জামরুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
প্রায় সকলের কাছে পরিচিত একটি ফল হল জামরুল। জামরুলে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ফাইবার,পানি,কার্বোহাইড্রেট,সুগার,কোলেস্টেরল,ভিটামিন-সি,ভিটামিন-এ,ভিটামিন-বি১,বি৩,আয়রন, ফসফরাস,পটাশিয়াম,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,সালফার,সোডিয়াম।জামরুলে থাকা ভিটামিন সি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে এবং শ্বেত কণিকা ও ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে রক্ষা করে।
জামরুলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের দূষিত পদার্থ দূর করে দেয়। জামরুলে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার যা খাদ্য সংবহনতন্ত্রের সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। জামরুল শরীরে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
আমড়ার পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
আমড়া একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। আমড়া খেলে মুখের রুচি বাড়ে। আমড়াই প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, লোহা ও আঁশ রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকার জন্য বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
আমড়াই রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম।এটি শিশুদের দৈহিক গঠনে খুব উপকারী। শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। তাছাড়াও আমড়া খেলে বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
লটকনের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
লটকন এক ধরনের অম্ল জাতীয় মধুর ফল। এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর। লটকন খেলে বমি ভাব দূর হয় এবং তৃষ্ণা নিবারণ হয়। লটকনে রয়েছে ভিটামিন সি। দিনে ২-৩ টি লটকন খেলে ভিটামিন সি এর সার্ভিস চাহিদা পূরণ হয়। লটকনে আরো রয়েছে এমাইনো এসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও সুস্থতার কাজে লাগে। এ সকল পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনে পাওয়া যায় ৯২ কিলোক্যালরি খাদ্য শক্তি, এবং ভিটামিন সি পাওয়া যায় ১৭৮ মিলিগ্রাম,শর্করা ১৩৭ মিলিগ্রাম,পটাশিয়াম ১৭৭ মিলিগ্রাম,ক্যালসিয়াম ১৫৯ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। লটকন রুচি বাড়াতে সাহায্য করে। তাছাড়াও ত্বকের রুক্ষতা কমাতে সাহায্য করে এবং প্রতিরোধ করে ত্বকের ফেটে যাওয়া।লটকন খেলে চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে উপকারী এই ফলটি।
কালোজামের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
কালোজাম হল দেশীয় ফলের মধ্যে অন্যতম একটি ফল। এ ফলের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। কালোজামে থাকা আইরন রক্তস্বল্পতা সমাধানের সাহায্য করে। কালোজামে থাকা ভিটামিন-সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কালোজাম ও এর বিচি নিয়মিত খেলে রক্তের সুগার লেভেল ৩০% কমে যায়। একটি গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে কালোজামে গ্লকোজ,ফ্রূক্টোজ এবং ডেক্সটোজ আছে যা আমাদের ক্লান্তি ভাব দূর করে এবং শরীরের শক্তি যোগায়। জামে থাকা প্রচুর পরিমাণ এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্যান্সার সেল গঠনে বাধা দেয়। জামে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এলজিক এসিড শরীর থেকে বাজে কোলেস্ট্রল দূর করতে সাহায্য করে।
তাল শাঁসের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা
তালের শাঁস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং রসালো ফল। তালের কচি অংশকে তালের শাঁস বলা হয়। তালের শাঁস এই গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। প্রতি ১০০ গ্রাম তালের শাঁস এ থাকে ৯২.৩ শতাংশ জলীয় অংশ। যে কারণে শরীর সতেজ থাকে। তালের শাঁস শরীরের পানি শূন্যতা মেটাতে সাহায্য করে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় গঠন করতে সাহায্য করে এবং হাড়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তালের শাঁস এ থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
লেখকের মন্তব্য
গ্রীষ্মকালীন ফলের পুষ্টিগুন ও উপকারিতা অনেক বেশি।এছাড়াও যেকোনো মৌসুমী ফল আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। গ্রীষ্মকালীন এ ফলগুলো অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত এ মৌসুমী ফলগুলো পরিমিত পরিমানে খাওয়া।গ্রীষ্মকালে কি কি ফল পাওয়া যায় এবং সেগুলোর উপকারিতা জানা সকলের জন্য জরুরি।
প্রিয় পাঠক,এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধু বান্ধব ও আত্বীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করতে পারেন,যেনো এই পোস্টটি পড়ে উনারাও উপকৃত হতে পারেন।ধন্যবাদ।
আর এস জান্নাত এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url